টাঙ্গাইলের মডেল সরকারি প্রাইমারী স্কুলের লাইব্রেরিতে গোপনে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করার অভিযোগ ওঠেছে। সোমবার(১৮ আগস্ট) বিকালে স্কুল প্রাঙ্গণে অভিভাবকদের সাথে সম্প্রতি ভর্তি হওয়া কোচিং সেন্টারে অধ্যায়নরত ওই শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। এ বিষয়ে তদন্তকারী দল ইতোপূর্বে প্রকাশিত সংবাদে উত্থাপিত অনিয়মের তথ্যের বেশ কিছু সত্যতা পেয়েছে।সুবিধা বঞ্চিত অভিভাবকদের অভিযোগ, দ্বিতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষা শেষে কোচিং ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের আরো কয়েকজন ছাত্রীকে পঞ্চম শ্রেণির সরকারি বৃত্তিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে তোড়জোর চালানো হচ্ছে। সেজন্য আবারও গোপনে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওইসব শিক্ষার্থীদের সম্প্রতি ভর্তি দেখানো হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে পরীক্ষা শেষে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে কয়েকজন সাংবাদিক যান। এতে বিরক্তি প্রকাশ করেন উপস্থিত সহকারী শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষক তসলিমা জাহান এরপরও পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও দ্বিতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাংবাদিকদের জানান। তবে বিতর্কিত শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। মডেল সরকারি প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক তসলিমা জাহান জানান, পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ২১০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০২ জন দ্বিতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। বিতর্ক উঠা শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় মূল্যায়ন পরীক্ষায় কীভাবে অংশ নিল- এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নিয়ে স্কুল ত্যাগ করার সময় সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার সাংবাদিকদের ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিও ধারণ কেন করলেন- এমন প্রশ্নের জবাব দেননি সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার। তবে বিদ্যালয় ছুটির সময় সাংবাদিকরা কেন মহিলা শিক্ষকদের কাছে আসবেন? এমন প্রশ্ন তুলেন শিক্ষকরা। এরআগে স্কুলের লাইব্রেরিতে ‘গোপনে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দিল সাত শিক্ষার্থী, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা’ শিরোনামের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি সংবাদের বেশ কিছু সত্যতাসহ একদিনে একাধিক শিক্ষার্থী ভর্তির তথ্য পেয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিন জানান, তদন্তকারী দল ইতোপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে উত্থাপিত অনিয়মের তথ্যের বেশ কিছু সত্যতা পেয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটি ১০দিনের মধ্যে অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠাবে।সংবাদকর্মীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ায় শিক্ষকদের বিরক্তি ও সরকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তারের ভিডিও ধারণ করার বিষয়ে তিনি জানান, সংবাদের প্রয়োজনে সাংবাদিকরা অবাধে সব স্থানে যাবেন ও তথ্য উদঘাটন করবেন। এখানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কোন সুযোগ নেই। সহকারী শিক্ষক আয়েশা আক্তার কেন ভিডিও ধারণ করেছেন এ বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।